কামতা সংস্কৃতিত ভ্যাড়ার ঘর ছোবা আর দোল সোয়ারী নিয়া কিছু তৈথ্য।

দোলের আগের দিন কাঠ খর জ্বলেয়া ‘বহ্নুৎসব’ করার রেওয়াজ  বহুত দিন থাকি যা পুরাণত ল্যাখা আছে। বহ্নুৎসব, মদনদাহ বা কামদাহের সাথত জড়িত। যোগেশ চন্দ্র রায় বিদ্যানিধির মতে বৈদিক যুগত এইটা ছিল বছর শুরুর ধর্মীয় উৎসব। উমরা আরও কৈচেন ৩১৯ খ্রিস্টাব্দে পুষনা সংক্রান্তিত সূর্যের উত্তরায়ণ হৈত। তারও ছয় হাজার বছর আগে উত্তরায়ন পাছেয়া হৈত ফাগুনি পূর্নিমা তিথিত। উত্তরায়নে যাত্রাকাল থাকিয়ায় নয়া বছরের সূচনা হৈত।

*Collected

সেই সমায় ফাগুন পূর্ণিমাক উত্তরায়নের শুরু বুলি ধরা হৈত। গতির পরিবর্তন বা দোলন থাকি ‘দোল’। দোলের আগের দিন জুই জ্বলানোর এই ‘হোলাক’ বা ‘হোলক’ উৎসবের রীতিটা আর্যলা অনার্যলার কাছ থাকি পাইচিল। আর্যলায় নরবলির বদলে পশুবলির শুরুবাত করে, সুশস্য উৎপাদনের জন্যে জুই জ্বলানোর আগত ভ্যাড়া/মেষ বলি দিয়া সেইটাক ছোবা দিত। এই জন্যে ভ্যাড়ার ঘর ছোবা (কথাটা হয়তো এটিখোনা থাকে আসিচে) কওয়া হৈত। আর এইটা হৈত চৈত্র মাসত। আলবিরুনীর লেখাত এই অনুষ্ঠানের সমায় কাল চৈত্র মাস বুলি উল্লিখিত আছে। গরুর পুরানতও সেই একই সমায়ের কথা আছে। 

সূর্যের উত্তরায়ণ শুরু হয় 22 শে ডিসেম্বর এর পর থাকি। অয়ন শব্দের অর্থ গমন বা যাত্রা বা সৌয়ার(হিন্দি)। গতির পরিবর্তন বা দোলন থাকিয়া দোল। দোলের প্রধান অধিদেবতা ছিলেন বিষ্ণু। পরবর্তীতে এই প্রথাত শ্রী কৃষ্ণের প্রবেশ ঘটে। দ্যাও বা দেবতা যেলা নিজের আসন ছাড়ি অন্য জাগাত যায়া পুজা গ্রহন করেন সেলা ঐটাকে কয় ‘যাত্রা’ বা ‘গমন’।

*Collected

অন্য অর্থত ‘অয়ন’। সূর্যের গমন পথের পরিবর্তন বা যাত্রা রূপকার্থে ‘দোলন’ বা ‘দোল সোয়ারী’। আর্য ঋষিলা বাস করিতেন সিন্ধু উপত্যকাত, পঞ্জাব অঞ্চলত। জারের দিনত যেটিখোনা খুব ঠান্ডা। উমরালা বিশেষভাবে লক্ষ্য করছিলেন উত্তরায়ণ যেদিনত শুরু হৈত সেদিনত দিন থাকে দশ ঘন্টার আর রাতি চোদ্দ ঘন্টার। সূর্য যত উত্তরে সরে(আপাত গতির কারণৎ)ততই দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ে, আলো বাড়ে, তাপ বাড়ে। প্রকৃতিও যেন নয়া প্রাণ পায়া জাগি ওঠে। জড়তা কাটে জীবকূলের।

ঋগ্বেদীয় ঋষিলা এই জার (শীত) কাটানোর জন্যে আয়োজন করিত হোম(যজ্ঞ)এর।সুর্য চলাচলের পথে আইসত “ফাগুন”। দোল পৌর্ণমাসী বা দোল পূর্ণিমাত বিষ্ণুবিগ্রহের সিংহাসন উত্তর-দক্ষিনে দোলানো হৈত, উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নক ফম থুইয়া, যেহেতু সেই সমায়ে ফাগুনি পূর্ণিমাকেই উত্তরায়নের শুরু বলে ধরা হৈত।জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুসারে ভদ্রপদা নক্ষত্রক পাছত থুইয়া সূর্যক উত্তরায়নের ওদি গমন করিতে হয়।অনেক সমায় এই নক্ষত্র দেড়ি করি উঠিলে উত্তরায়নেও দেড়ি হৈত। এই নক্ষত্রক কোনো কোনো জাগাত অজৈকপাদ (অজ+একপাদ) নক্ষত্র বলে উল্লেখ করা হৈচে। যার অর্থ এক ঠ্যাং বিশিষ্ট ভ্যাড়া/মেষ। উত্তরায়নের পথত আগের গেইলে সূর্য্যক এক ঠ্যাং বিশিষ্ট মেষরূপী অসুরক বধ করি আগা খায়।সমাজতাত্ত্বিক নির্মল বসুর মতে, ইয়ার পাছিলাত একটা বিজ্ঞানভিত্তিক কারণও আছে। জীবরক্তত জমির উর্বরতা বাড়ে। তাই পশুবলি। গোষ্ঠীবদ্ধ মানষির বাসন্তিক আবহে ক্রমবর্ধমান মানবিক ও জৈবিক কামনা বাসনাক শৃঙ্খলাবদ্ধ করির জন্যে এই প্রথাটাক চালু করা হয়। কবি ভারতচন্দ্র পর্যন্ত এই সমায়ক মনে করি লেখিছেন “বারমাস মধ্যে মাস বিষম ফাল্গুন/মলয় পবন জ্বালে বিরহ আগুন”। স্কন্দপুরাণত আছে মহর্ষি কাশ্যপের মহিষী দিতির গর্ভত মনুর মানস পুত্র হিরণ্যকশিপু আর কন্যা হোলিকা জন্মায়। হিরণ্য নর ও সুর(দেবতা) এর অবধ্য ছিল। হোলিকা ছিল অনলজয়ী (জুইওত অবধ্য)। বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদক জুইওত ছোবা দিবার যায়া হোলিকা পুড়ি ছাই হয়া যায়। সেই থাকি হোলিকা রাক্ষসীর কথা জানা যায়। হিন্দীত ওটি থাকি “হোলিকা দাহ” বা “হোলি জ্বলানো” কথাটা আসিচে। ওটি এই অনুষ্ঠানক কয় ‘সংবৎ জ্বলানো’ বাংলাত বুড়ির ঘর জ্বলানো। ক্রোনোলজি অফ এনসেন্ট ইন্ডিয়া গ্রন্থে ভেন্দলাই গোপাল আইয়ার কন ‘হোলি’ নামটা আসিচে ‘হোলিকা’ রাক্ষসীর নাম থাকি। জুইএর লেলিহান শিখাত শুকান কাঠ, পাতা ইত্যাদি ‘চর চর’ করে পুড়িতে থাকে। বাতাসত ঘুরপাক খাওয়া এই শব্দক সংস্কৃতে “চর্চরী” কয়। সেই থাকি আসিচে ‘চাঁচর’ কথাটা। পুরাণ বর্ণিত বহ্নুউৎসবক তাই “চাঁচর উৎসব” কওয়া হৈচে।

Courtesy: A. Bhattacharya