কামতা সাহিত্যের  “গোসানীমঙ্গল” কাব্যগ্রন্থের মঙ্গলাচরণ  ভণিতা।

মঙ্গলাচরণ 

নাম গুরু নিরন্জন, পিতা মাতার শ্রীচরণ,
 
যাঁর তেজে ব্রহ্মান্ড সৃজন। 
 
নম দেব গণপতি, দুর্গা লক্ষ্মী সরস্বতী, 
 
হরি হর ব্রহ্মা নারায়ণ।। 
 
হরেন্দ্রনারায়ণ রাজা, বেহারে পালেন প্রজা, 
 
যাঁর যশ ঘোষে সর্বজন। 
 
সেই রাজ্যে করে ঘর, সাধু সে করুণাকর,  (করুণাকর – গোসানীমঙ্গল রচয়িতা রাধাকৃষ্ণের পিতা )
 
পরম বৈষ্ণব গুণধাম।।
 
তাহার তনয় এক, পাইয়া চৈতন্য ভেক,
 
চিন্তে হরি-চরণ-কমল।
 
তাহে আদেশীলা দেবী, কহে রাধাকৃষ্ণ কবি,
 
সুমধুর গোসানী-মঙ্গল ।।
অবনী লোটায়ে কায়, বন্দে গোসানীর পায়, 
 
আদেশ পাইয়া মনে ভয়। 
 
যেরুপে গোসানী নাম, কান্তেশ্বরী অনুপম, 
 
ব্যক্ত হইল আপন ইচ্ছায়।।
 
কান্তেশ্বরে করি রাজা, তাহার লইল পূজা, 
 
বর দিয়া করিলা অমর। 
 
চন্ডী যার পৃষ্ঠোপর, জিনে রাজা দেবাসুর, 
 
বাহু বলে শাসিল বেহার।। 
 
নম চন্ডী ভগবতী, দেবতা করিলে স্তুতি, 
 
কালীরুপে নিশুম্ভ বধিলা।
দেবী ঘোর যুদ্ধ করি, মহিষাসুর বধ করি, 
 
দেবগণে উদ্ধার করিলা।।
 
ভজ চন্ডী কর পূজা, চন্ডী বরে হয় রাজা, 
 
হেলা না করিও চন্ডী পূজা। 
 
ইন্দ্র করি চন্ডী পূজা, অমর হইল রাজা, 
 
রামচন্দ্র কৈল চন্ডী পূজা।। 
 
ক্ষত্রকূলে ব্যাধ হৈয়া, মৃগ মারে বনে গিয়া, 
 
সেই ব্যাধ কৈল চন্ডী পূজা।
 
কালকেতূ নাম তার, পাইয়া চন্ডীর বর, 
 
গুজরাটে হল মহারাজা।। 
চন্দ্র – বংশে কৈল পূজা, ভগদত্ত মহারাজা, 
 
কামরুপেশ্বর মহাবীর।
 
পাইয়া চন্ডীর বর, এক রথে বীরবর, 
 
দিগ্বিজয় করে নিরন্তর।। 
 
কুরুক্ষেত্রে করে রণ, যুধিষ্ঠির দুর্য্যোধন, 
 
সংসারের যত রাজাগণ। 
 
দুর্য্যোধন দুরাচারে, বরে ভগদত্ত বীরে, 
 
ভগদত্ত কৈল ঘোর রণ।। 
 
ভগদত্তার্জ্জুনে রণ, পৃথিবী না সহে টান, 
 
ভগদত্তে অর্জুনে কাটিল।
 
বেহারে নাহিক রাজা, ব্যাকুল হইয়া প্রজা,
 
অরাজক কত কাল ছিল।। 
হইল আকাশ বাণী, পূজা কর মা ভবানী, 
 
পুনঃ হবে রাজ্যের ঈশ্বর। 
 
গোসানী করহ পূজা, সুখে রবে যত প্রজা, 
 
রাজা হবে নাম কান্তেশ্বর।। 
 
শুনিয়া আকাশ বাণী, পূজা করে মা ভবানী, 
 
বিল্বপত্র দিয়া ফল ফুল। 
 
পূজা পায়া বর দিল, ভবানী কৈলাশে গেল, 
 
ভণে কবি গোসানী-মঙ্গল ।।


# Mangalacharan, Gosanimangal, Kamta Literature, Raja Kanteshwar, Kavi Radhakrishna,