নির্বাচিত ভুমিপুত্রলার (?) ভুমির পত্তি কি দায়বদ্ধতা?

যায় যায় CAB এর আওতাত ছিলেন এলা কেমন মনে হবার ধৈরচে? Feel good good মনে হবার ধৈরচে না.. নাকি যেমন ছিলেন অমনে নাগির ধৈরচে? আগতো যেমন এলাও অমন। কয়দিন আগত ভাবছিলেন এই পার্টিটা বিদায় হৈলে ভাল্ হয় খালি nrc nrc করি চিকরির ধৈরচে। এলা ভাবির ধৈরচেন ভোট টা ইমাকে দিমো। ভারতের নাগরিক করিলেক হামাক, কম ব্যাপার স্যাপার নোমায়। এদ্দিন নাগরিক ছিলোং কিনা ঠিক জানা ছিলনা, বড় জ্যাঠো আর বড়াই এর জন্ম – বই পড়া – চাকরী- সংসার – মৃত্যু হয়া স্বর্গবাস হৈচে; গয়া, কাশী, বৃন্দাবন ঘুরি চতুরাশ্রম কমপ্লিট করি কমপ্লিট ম্যান আর কমপ্লিট ওম্যান হয়া মরিচে। উমরা তো বুঝিরে পাইলনা CAB টা কি? মাথাত দেওয়া জিনিস নাকি, ওহ ওটাক তো CAP কয়, – বড় জ্যাঠো থাকিলে এই কতায় কৈলেক হয় আজি।হামরা তো জানিনাই যে হামরা ভারতের নাগরিক নাহই। ভারতের নাগরিক না হয়াও আজু ঘর রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, কর্মসংস্থান কার্ড, জব কার্ড, এপিএল-বিপিএল কার্ড আর হামরালা আধার কার্ড নিয়া ব্যারের ধরচি। ভোটার কার্ড দিয়া ভোট দিচি, মাঝকিলা কাকা ব্লকের ন্যাতাও ছিল, ডাইরেক্ট কলিকাতাত হাত ছিল। বিধান আজু দিয়া শুরু হৈচিল রাজনীতি আর জ্যোতি আজু দিয়া শ্যাষ। জ্যোতি আজুর স্নেহের পাত্র ছিল একসমায়। এই তো কয় বছর আগের কতা সেলাও হামরা জানির পাই নাই যে হামরা ভারতের নাগরিক নাহই। ঐ বছর দেবী পূজাত সেই আনন্দ করিলোং, 108টা পদ্ম হামরা কয়জন বন্ধু মিলি যোগার করিচি যাতে দেবী মাও খুশি হয়া হামার কিছু করে।

লক্ষ্মী পূজার দিন বাবা নিজে জলত নামি শালটেয়া থাকি পূজার জন্যে দুইটা পদ্মফুল ছিড়ি আনিচে, ফুলের সাথত একটা মুড়াও নিয়া আসিচে আর মুড়াটাক বাড়ির পাছিলা পাকের পাকহালা ডিগিটাত ফ্যালে দিচে যাতে পত্তি বছর শালটেয়া যাওয়া নাখায়। ঘরতে যাতে পদ্মফুল ফোটে। ছানত পদ্মফুল ফোটার নাকান যাতে হামরায় গেরামের পদ্মফুল হই। কিন্তুক কালী পূজা শ্যাষ হইতে না হইতেই একদিন সৈন্ঝার সমায় বাবা বাড়িত আসি কয় যে শালটেয়া থাকি যে মুড়াটা নিয়া আসি পাছিলার ডিগিত ফেলাচুং ওটা ওদি পচি যায় নাকি কায়জানে। আঈ কয় কিসের আরো মুড়া পচে? বত্তা মুড়াটা বোলে পচে, নাই ফাউকশালি কতা। দেবী মাও, লক্ষ্মী মাও, কালি মাও এর আশুর্বাদ আছে, যাত্রা পূজাও করিচি, শিবচন্ডী ঘট পূজাত ভক্তি দিচি, মুড়া পচিবে না হামার ডিগিত। বাবা খানেক চিন্তাত ছিল সেদিন সৈন্ঝার সমায়, রাইতোত খাওয়ার সমায় কয় আজি এখনা খবর শুনলুং, সরকার বোলে নাগরিক সংশোধন করিবে, আর তার আগত নাগরিক রেজিস্ট্রেশন করিবে। আঈ কয় এলাবা..ওলা আরো কি জিনিস, মইল্লোং তিন ক্যাচালত। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এইলার তালে কি হৈবে? এইলা দিয়া রেজিস্ট্রেশন হৈবে না? ভোটার কার্ড দিয়া রেজিস্ট্রেশন নাহৈলে ফির হামরা যে ভোট দিচি ঐটা কেংকরি নিলেক সরকার? ঐলা চালাকি সরকারের.. আঈ হাসিয়া কয়। খানেকখন পর মুখ খান নাল করি আঈ কয়.. ফাকতে পদ্মর মুড়াটা আনিছেন, পচুক ওদি। খালি পচুক বা সরুক দিয়া আঈওর মন শান্তি হয় নাই। বেটাক কয়াও দিল্ মুড়াটা ডিগি হাতে তুলি ছানের ঢিপিত ফ্যালে দিবার।এইবার ফুটুক দেখি ছানত পদ্ম।বছর ঘুরিতে না ঘুরিতে nrc নিয়া তোড়জোড় শুরু হয়া গেইল্। বাবার তো মাথাত চিন্তার ভাঁজ, কাকাঘর পন্চায়েত পোধান পাকাপাকি নাগাইচে, বাবাও ভালে কয়বার গেইল্ পোধানের বাড়ি ভোটার কার্ড, আধার কার্ড নিয়া। সাথত 58 সনের আজুর পাসপোর্ট আর ভিসার জেরক্স করা কাগজখানও ধরি গেইল্ একবার। পোধান কয় 58 সনে ভারতত আইসচেন ভিসা নিয়া.. তারপরে এদি এদি এদি। পোধান কাগজ দেখি চিন্তা করে  আরো কয়, ওত্তিকার জমি জাগা ব্যাচেয়া তোমার বাপ আগতে মনস্থ করি আসিচিল যে একবার ভারতত ঢুকির পাইলে হয় তারপর আর কায় দ্যাখে। যাইহোক এই কাগজখান দ্যাখেয়া তোমরা nrc পার হবার চান? Nrc পার হবার পাইবেন কিনা জানং না তবে বর্ডার পার পাক্কা – পোধান হাসে আর কয়। তোমরা এইখান কাগজ ঢ্যাক্সত থোয়ার থাকি ছোবা দেওয়ায় ভাল্ হৈবে। বাবা মন কালা করি বাড়ি ফিরি আসিল্, মনে মনে কয় যা জ্বালাত পড়িচি, কি যে হয়। হামরা তো একলায় আসিনাই, ম্যালা মানষি আইসচে হামার নাকান করি তার ভিতরাত তো ন্যাতা মন্ত্রীও আছে – মনত খানে জোর আনি মনে মনে কয়, ঘন্টা কিছুই হৈবেনা, হৈলে আগতে হৈলেক হয়।এইলা পিয়াজির সাপ্লাই মিছাং কম করি পিয়াজির দাম বাড়া বুদ্ধি। এইনাকানে চলুক না দেখি কদ্দিন চলে। 

বাপই পদ্মর মুড়াটা যে ছানের ঢিপিত ফেলাছিস দেখতো ঐটা আছে না নাই, যেদু থাকে তো নগুলের পত্রি দিয়া খোক্টে দ্যাখেক ভিতরাখান কাচা আছে না শুকি গেইচে, আঈ উমার বেটাক কতালা কইতে কইতে বান্নি দিয়া আইন্না সামটির নাগছিল সাকাল সাকাল। বাপই নিন হাতে উঠি পতন্জলি ব্রান্ডের টুথ ব্রাশ আর পতন্জলি পেস্ট দিয়া দাঁত মাজিতে মাজিতে এখান বড়বাঁশের আগালি দিয়া ছানের ঢিপি খোক্টের নাগিল্। দুই তিনবার খোক্টাইতে কালে ছানের ঢিপি হাতে পদ্মর মুড়াটা বিড়ি আসিল্, কয় খান চেরাও ঘিরি ধরি আছে মুড়াটাক। বাপই চেরাওলা সিনডা দিয়া সারেয়া পাক্টির পাড়ত জল দিয়া ভাল্ করি ধুইয়া উয়ার আঈওক দিল্ মুড়াটা। তারপরে রাজশ্রী খাওয়া কলটেয়া দাঁতলা নগুল দিয়া দুই তিনবার ঘোচলা ঘুচলি করি, মুখখান কুলিকুচি করি, পতন্জলি ব্রাশটা ধুইয়া আঈওর দোয়ার গেইল্। আঈ পদ্মর মুড়াটা হাতত নিয়া সেলা নগুলের পত্রি  দিয়া নিজেই খোকটের নাগছিল। পদ্মর মুড়া দিয়া এলা ফির কি করিবু আঈ -বাপই পুছিলেক। আঈ ততখনে খোক্টাখুক্টি করি বুঝি গেইচে যে মুড়াটা বত্তায় আছে। বাপইর কতা শোনার সেলা আর সমায় নাই, বাপইকে উল্টা কয়া দিল্ যে বেশী কতা কৈসনা, জামা প্যান্ট পাল্টে গামছা খান পিন্দি পাছিলা পাকের ডিগিত নামেক আর মুড়াটা ভ্যারত পোতে থো। মুড়া পোতে থুইয়া ডিগি হাতে উঠি গাও পাও ধুইয়া চাচুড়া খাওয়ার সমায় ফেসবুকটা খুলি বাপই সেলা সেনে বুঝির পায় আঈওর মন মেজাজের কতা। 

ইমারে বাড়ির আগপাকে প্যাটলা ধনী ঘরের কমোড় এলাও সোজা হবারে পায়নাই। প্যাটলা ধনীর ছিল 120 বিঘা জমিন, 5 বেটা 3বেটি প্যাটলা ধনীর। রাজার শাসনত জন্ম, রাজার শাসনত খেলখেলা, রাজার শাসনত স্কুল যাওয়া, রাজার শাসনতে বিয়াও, সংসার, চুকানীদার হয়া। কিন্তুক জমির আবাদ করা আর জমির খাজনা দেওয়াটা গোটায়খান রাজার আমলত হৈল্ না। যে বছর ভারত স্বাধীন হয় তার আগের বছর প্যাটলা ধনীর বিয়াও হয়। সরল জীবন যাপন, সরল সমাজ, নাই বায়রার মানষির আনাগোনা, নাই বায়রার রকমারী জিনিসের বেচাকেনা। প্যাটলা ধনীর কতাত উমার আর কি সুখ শান্তি, উমার আজু আর আবো ঘর তো আরো সুখ শান্তিতে ছিল। দ্যাশ স্বাধীন হৈল্, রাজ্য ওসার হৈল্ কিন্তুক প্যাটলা ধনীরঘর স্বাধীন ভারতের পরাধীন বাসিন্দা হয়া গেইল্ ।

ভারত স্বাধীন হওয়ার 8 বছরের মাথাত সরকারে 20 বিঘা জমিন নিয়া নিল্ নয়া কানুন কায়দা করি। সেলা বড় বেটা, মাঝকিলা বেটা আর বড় বেটির জন্ম হৈচে। সগায় ছোট ছোট। প্যাটলা ধনীর নাকান প্রায় সৌগ পুরানি স্থানীয় মানষির সেলা এইনাকানে জমিন ছিল আর হালুয়া ছিল। অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত এই ধনীলার আয় বলিতে ভুই আবাদ করা আর ফসল হাটত বেচা। যতদিন যায় তত ধনীর ঘর পরাধীন হৈতে থাকে নিজের জমিনের অধিকার নিজেরে নাই কওয়া যায়। প্যাটলা ধনীরও একে অবস্থা। ধনী খালি নামেই, আসলে হালুয়ার নিকট ধনী। জীবন যাত্রার সূচক, আয় ব্যয়, কেনার দাম বেচার দাম এইলা কুল্লায় রাজার শাসনত আর পরাধীন দেশত আলদা ছিল। অনেকটা টাকা আর ডলারের নাকান। “প্যাটলা ধনী 7100 টাকা নিয়া স্বাধীন রাজ্য হাতে পরাধীন দ্যাশ গেইল্, পরাধীন দেশত যায়া দ্যাখে ওটি এই টাকার দাম মাত্র 100 টাকা”।

যে জমিনের রাজার শাসনত কোনো দামে নাই সেই জমিন স্বাধীন দেশত সেইই দাম হৈল্, ধনীলা ভাবিল্ মুই তো আরো বড় ধনী হয়া গেলুং, মোক কায় পায়? এংকরি অনেকে বেটির বিয়াত নিজের কিছু জমিন ব্যাচে দিল্, ধনী বুলি কতা মানটা তো রাখা খাইবে টাকা তো খরচা করায় খাইবে। জমিন বেচিয়া যে টাকা পাইল্ জিনিস কিনির সমায় দ্যাখে জিনিসের দাম আগত যেমন ছিল তার থাকি কয়গুন বেশী হয়া গেইচে আরো চচ্চরে বাড়িবার ধৈরচে। লাভের গুড় জলত ধুইয়া গেইল্। প্যাটলা ধনীও উমার দুই বেটির বিয়াত নাই নাই করি 10 বিঘা জমিন ব্যাচাইচে। তিন নম্বর বেটির বিয়াত জমিন বেচার মতন আর কিছু ছিলনা কারন স্বাধীন ভারতের রাজ্য সরকার প্যাটলা ধনীর 70 বিঘার মতন জমি কলমের এক সইওতে 35 বিঘা করি দিচে। প্যাটলা ধনীর তো অত  অফিসিয়াল কায়দাকানুন জানা ছিলনা। জমিলা খাস হওয়ার আগত প্যাটলা ধনী বুদ্ধি করি হালুয়াক 3 বিঘা জমিন দিবার পাইচে। আর বাকী জমিলার ভিতরা 32 বিঘা জমিন সরকারী নিয়মে খাস য্যান্ত্যান্ দাদাগিরি নিয়মে দখল হৈচে ঝান্ডা দিয়া। স্বাধীনতার সমায় যে সাগাইলা আসছিল উমরাও দেখিল্ এই সুযোগে যেদু হারে যাওয়া জমিনের কিছু পাওয়া যায় উমরাও তাল দিল্, ঝান্ডা আরো শক্ত করি ধরিল্। মানে সরকারের নীতি হৈল্ গরীব মানষি দিয়া প্যাটলা ধনীর নাকান নিম্ন মধ্যবিত্ত মানষির কমোড় ভাঙার নীতি। 

যাইহোক কোনোরকম করি তিন নম্বর বেটির বিয়াও হৈচিল। বড় বেটাটা তদ্দিনে এখনা কেরানীর চাকরী পাইচে বুলি অভাব অনটনে সাহায্য করির পাইচিল। 5 বেটার জন্যে 35 বিঘা জমিন। আর বাকী 32 বিঘা জমিন সরকার নিয়া যাক দিল্  তারো জমিন আবাদ করি কিছুই হয়না, ফোকটে লোন পাওয়ার নাকান জমি পায়া সেই জমিন দিল্ ব্যাচে আর ঘাটা ধরিল হরিয়ানা বুলি। সরকার জমিন চাষ করা মানষির উপরা আক্রমন করিচিল কিন্তুক টাকাহালা মানষির উপরা কিছু করে নাই। দেশের ধনবান মানষির সূচক কার কত জমিন আছে সেইটা দিয়া মাপা হৈল্, কার কত টাকা আছে ঢ্যক্সোত, ব্যাংকোত সেইটা দিয়া নোমায়!

 প্যাটলা ধনীর বেটালার ভাগত পড়িল্ কোনোরকমে 4-5 বিঘা জমিন। নেও এলা 4-5 বিঘা জমিন আবাদ করি সংসার চালান। বেটা বেটিক বই পড়াইবেন না দিন আনা দিন খাওয়া সংসার চালাইবেন না ভবিষ্যতের জন্যে জমাইবেন? বাধ্য হয়া উমার নাতিলা ঘাটা ধরিল্ ফুলিয়া, কেরালা আর হরিয়ানা বুলি। স্বাধীন ভারতের রাজ্য সরকার উমার যাতে সুবিধা হয় বৈদ্যাশ যাইতে তার জন্যে ডাইরেক্ট রানাঘাট – ফুলিয়া রকেট বাস চালু করিচিল। যার জমিন গেচিল তায়ো ফুলিয়াত আর যায় 4-5 বিঘা জমিন পাইচিল তায়ো ফুলিয়াত। তালে দ্যাশের জাগাত কায় থাকিল্? অর্থনীতি টিকি রাখির জন্যে, রাজনীতি করার জন্যে? বাকিটা ইতিহাস….নির্বাচিত ভুমিপুত্রলা (?) নীরব ভুমিকাত সর্বদা।  

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *