1892 সালের 20শে ফেব্রুয়ারি সৈন্ঝা 5টার সমায় প্রস্তাবিত ল্যান্সডাউন হলের ভিটি উদ্বোধন করেন মানী ভাইসরয় মহাশয়। ল্যান্সডাউন হলের জমিনের উপরা বিশাল শামিয়ানা টানেয়া তারে নিচত ঐ সমারোহ হৈচিল। দেশ বিদেশের ভাইল্যা অতিথি আসিছিল সেই দিনত। ভাইসরয়ক নিয়া মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ সভার জাগাত নিয়া আইসেন। গার্ড অফ অনার আর অভিবাদন দিয়া জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর সভা আরম্ভ হয়।
মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভুপবাহাদুরের ভাষন –
সুধী মহোদয়গণ
আজি হামরা এই সৈন্ঝাত সগায় হাজির হচি নয়া টাউনহলের ভিটি থাপনের সাক্ষী হৈবার জন্যে। এই জাগাত যেটি টাউনহল হৈবে তাতে মাননীয় ভাইসরয় মহাশয়ের সন্মতি আছে আর সুবান্ছাও পরকাশ করিচেন। হামার শহরত এইনাকান একটা হলের অভাব বহুদিনের। জনগনের দরকারত এমন কোনো গৃহ নাই যেটি সভা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার আয়োজন করা যায়। হামার এটি সেইনাকান কোনো ঘর নাই যেটা মনোরঞ্জনের জন্যে ব্যবহার হবার পায়।
তার উপরা বর্তমান পাঠাগারটার অবস্থা খুব একনা ভাল্ নাহয়, যেকোনো সমায় পরিকাঠামোর অভাবত বই এর সংগ্রহলা নষ্ট হবার পায়। মুই নিশ্চিত যে এই হলঘর বানা হৈলে তা জনগনক উৎসাহ দান করিবে। নিচের তলার ঘরলা জনগনের পাঠাগার হিসাবে ব্যবহার হৈবে, একটা ভাগ জনসাধারনের সভা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নেওয়ার জন্যে ব্যবহৃত হৈবে। এই গৃহের উপরার তলা স্থাপত্যশৈলি কাজত ব্যবহৃত হৈবে। মুই খুব খুশি যে সন্মানীয় ভাইসরয় সাহেব উমার নামত এই গৃহের নামকরনের জন্যে সন্মতি দিচেন আর মুই নিশ্চিত যে তোমরালা মোর সাথত যোগ দিবেন সন্মানীয় ভাইসরয় সাহেব যে হামারলাক সন্মান দিচেন তারজন্যে উমাক হামারলার পক্ষ থাকি আন্তরিক দন্ডবৎ জানাই।
(উপস্থিত অতিথিলা আর প্রজাসাধারন সগায় হাততালি দিয়া উচ্ছ্বসিত পরকাশ আর সাধুবাদ)
তোমার মহানুভবতা (মহারাজাক কয়া) আর ভদ্রমহোদয়গণ
মহারাজার ইচ্ছা অনুসারে নয়া হলের ভিটি থাপনে মুই খুব খুশি হচুং। এটা মুই বুঝির পাচুং যে তিনটা কারনত এই হলের থাপন। স্থাপত্যশিল্পীলার মিলনের জাগা, পাঠাগারের জাগার পরিবর্তন আর জনসাধারনের সুবিধার জন্যে সৌগনাকান সভা আর মিলনক্ষেত্র। যদিও মুই স্থাপত্যবিদ নাহং ত্যাংও কর্মসূত্রত মহারানীর (ইংল্যান্ডের) রাজত্বের নানান জাগা ঘুরি পৃথিবীর নানান জাগাত স্থাপত্যবিদলার শিল্পকলা দ্যাখার সুযোগ হৈচে, মুই আত্মবিশ্বাসের সাথত কবার পাং যেলায় উমার সাথত দ্যাখা হৈচে আর কথা হৈচে সেলায় বুঝির পাচুং উমরা জনহিতকর, নিপুণ কাজত নিজক যুক্ত করার জন্যে উৎসাহী হৈচেন। পাঠাগারের কথা শুনি ভাল্ নাগিল্, বর্তমানে ম্যালা বই এর সংগ্রহ আছে। হামরা জানি ভারতীয় বইলার খুব যত্নের দরকার পরে অন্য দেশের থাকি। কোচবিহার লাইব্রেরি উপযুক্ত একটা নয়া ঘর পাইবে।
কোনো গুরুত্বপূর্ণ শহরত জনসাধারনের মিলন হওয়ার জন্যে আর সভা সমিতির জন্যে উপযুক্ত পরিকাঠামো দরকার, এই গৃহ সেই সুবিধা দিবার জন্যে সাহায্য করিবে। সেই সভাগৃহ সামাজিক বা রাজনৈতিক অথবা আনান্দনুষ্ঠান বা শোক অনুষ্ঠান যাইহোক অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার জন্যে ব্যবহার হোক। ছোটোবেলাত এইনাকান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার জন্যে গৃহর অভাব বুঝির পাচুং। মুই নিশ্চিত এই নয়া গৃহ কোচবিহার বাসীর উপকারত আসিবে। মুই খুবে খুশি যে কোচবিহারের মহারাজাধিরাজ মোর নামত এই সভাগৃহের নাম রাখার জন্যে মনস্থির করিচেন। মুই প্রতিশ্রুতি দিলুং এই গৃহ নির্মানত অভিভাবকের নাকান করি সাথত থাকিম।
(সন্মানীয় ভাইসরয় মহাশয় ভিটি থাপন করার পরে উপস্থিত সৌগ অতিথিলাক উমার কৃতজ্ঞতা জানান। অনুষ্ঠানের শ্যাষত মহারাজা সহ সন্মানীয় অতিথিলা সভাস্থ্ল থাকি চলি যান)
Related Posts
কুচবিহার (কামতাপুর) রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা বিশ্ব সিংহ।
আঈভাষাত শিক্ষার অধিকার/হরণ না করেন আর।
কেন তাঁরা ভাষার এক নাম নিয়ে সংবেদনশীল নয়? কেন দ্বিচারিতা?