কোচবিহার রাজ্যের জমির ভাগগুলা 1870 – 1880 AD

জোতদার, চুকানীদার, দরচুকানীদার, দরাদরচুকানীদার, তস্যচুকানীদার আর আধিয়ার ছাড়াও আরো ভালে কয়নাকান জমির অধিকারী ছিল কোচবিহার রাজ্যত (সমায়টা 1870 – 1880 সাল নাগাদ)। সেই জমির অধিকারীলা হৈল্ –

1. ব্রণ্মত্তর

2. মোকররী

3. প্যাটভাতা

4. বকসিস

5. দেবত্র

6. পীরোত্তর

7. জায়গীর


ব্রণ্মত্তর 

যে জমিন রাজা প্রতিপালনের জন্যে বামনোক দান করে তাক ব্রণ্মত্তর কয়। এই জমিন পুরুষানুক্রমিক আর হস্তান্তরযোগ্য।

মোকররী

যে জমিনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হৈচে নির্দিষ্ট খাজনার ভিত্তিত। এই জমিনের মালিকক খালি পাট্টা দেওয়া খায় আর কোনো কাগজ নাগেনা। এই মোকররী দুই নাকান -কোনো পাট্টাত রাজা উত্তরাধিকারী স্বত্ব দান করিচে আর কোনো পাট্টাত রাজা সেটা করেন নাই। উত্তরাধিকারী না থাকিলে সেই জমিন রাজ্য সরকারের হয়া যাইবে। 

প্যাটভাতা

রাজা তাঁর জ্ঞাতি গুষ্টির ভরণপোষণের জন্যে উমার মরার আগ পর্যন্ত কিছু জমিন দান করে। পোথোম জন মরি গেইলে তার উত্তরাধিকারীলা আরো যেদু পাবার চায় সেই জমিন তালে আবেদন করা খায়। আর যেদু সেই জমিন পুনঃদান না করা হয় তালে জোত হিসাবে ঐ জমিন দেওয়া হয়। অন্যান্য জোতের নাকান ইমাকো খাজনা দেওয়া খায়। প্যাটভাতা জমির স্বত্ব হস্তান্তর হয় না। 

 বকসিস

এটা একনাকান নাখেরাজ জমিন। কাংওকো এই জমি দেওয়া হয় না, এটা কেবল ভাল্ কাজের জন্যে পুরস্কার। এই জমিনের স্বত্ব পুরুষানুক্রমিক, হস্তান্তর যোগ্য। উত্তরাধিকার না থাকিলে সরকার নিয়া নেয়। 

দেবত্র

দেবদেবীর পূজার খরচাপাতি করার জন্যে এই জমিন দেওয়া হয়। এই জমিনের স্বত্ব বেচাকেনা বা হস্তান্তর হবার পায় না। দুইনাকান দেবত্র আছে যেমন – 1. রাজকীয় দেবত্র – দেব দেবীর পূজার জন্যে সরকারী কার্যকারক নিযুক্ত থাকে যাক কয় ধর্মাধ্যক্ষ। এই ধর্মাধ্যক্ষের তত্ত্বাবধানে পূজা পরিচালনা হয়। অ্যাক অ্যাক জাগার জন্যে নির্দিষ্ট বেতন আছে। দেবত্র জমিনের খাজনা থাকি এই বেতন দেওয়া হয়। 2. রাজবাড়িত বা রাজার নিজস্ব দেবদেবীর পূজার জন্যে কিছু জমিন আছে। পূজার জন্যে কতলা সেবাইত নিযুক্ত থাকে যার উপরা ধর্মাধ্যক্ষের কোনো কতৃত্ব নাই। রাজকীয় দেবত্র প্রাপ্ত সেবাইত গত হৈলে অন্য সেবাইত নিযুক্ত হন। আর তার যেদু উপযুক্ত উত্তরাধিকারী থাকে তালে উমরাও নিযুক্ত হবার পান। 

পীরোত্তর

মোচরমান মানসিলাক উমার দেব সেবার জন্যে যে জমিন দেওয়া হয়। 

জায়গীর

প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়মিত সমায়ে রাজকার্য করিবার জন্যে কতলা লোক নিযুক্ত থাকে। উমারলাক বেতন না দিয়া কতলা জমির উপস্বত্ব ভোগ করিবার অধিকার দেওয়া হয়। সেই জমিনক কয় জায়গীর। যেদু উমরালা কাজ না করে বা কাজের মানসি নাহয় অথবা কাজের দরকারে না থাকে তালে আর জায়গীর থাকেনা। জায়গীরের জমির স্বত্ব ব্যাচের অধিকার নাই। উপযুক্ত উত্তরাধিকারলায় জায়গীরের অধিকারী হন। কিন্তুক রাজা বাধ্য না উত্তরাধিকারক জমিন দিবার। নিচা শ্রেণীর যে কর্মচারীলা আছে উমরালায় জায়গীর পায় সাধারনত যেমন – বোকনাধরা, ঝাড়িধরা, তামাকবরদার, পাখাধরা ইত্যাদি। যায় যে কামাই করে সেই হিসাবে উপাধি দেওয়া হয়। 

জমিনের প্রকারগুলা যার উপরা আলদা আলদা খাজনা ধার্য হয় সেগুলা হৈল্ – আউয়াল, দৈয়ম, ছৈয়ম, চাহরম, বাঁশভুই, ছন, লায়েকপতিত, নিজবাস্তু, বাজে বাগান, গুয়া বাগান আর প্রজাবাস্তু ।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *