অণুগল্প : “এক বাউদীয়ার কাহানি” – রোহিত বর্মন

এক বাউদীয়ার কাহানি

লেখাইয়া: রোহিত বর্মন

বাউদীয়া কথা খান হুইল রাজবংশী মানষিলার এখান প্রচলিত কথা। এই বাউদীয়া কথার অর্থ হুইল যায় যায় কাম কামাই না করিয়া সারাদিন ঘুরিয়া বেড়ায়, ওমাকে বাউদীয়া কয়।

সুশীল নাম তার করে না কোন কাম। সাকাল হুলে বিড়ায় বাড়ি থাকি, আইতোত আইসে ফিড়ি বাড়ি। বাপ কয় হায় রে সুশীল এমন করি বেড়ালে হুইবে কিতা তুই ক বাউ। সুশীলের কথা তোমরা না মোক এমনেও বাউদীয়া কন সেমনেও কন বাউদীয়া মুই কামাই করিম কেনে তা। সুশীলের কথা শুনিয়া বাপের মাথা গেইল নড়িয়া। 

হায় রে সুশীল তোক মায়াও না নাগে রে তোর বাপ টা বুড়া হয়া গেইল আর বুড়া বাপ টা মাঠত করে কামাই, আর তুই সারাদিন আতি এংকরি বেড়াইস বাউদামি করি ঘুরি। বাপে মাওয়ে বুদ্ধি করিল সুশীল বাউদীয়ার নাগাইবে এবার বিয়াও। সুশীল আজি যাবু না কোনটে রে, তোর আজি দেখা দেখি, কইন্যার বাড়ি থাকি আসিবে মানষি বোল যাবু না কোনটে। আচ্ছা বাবু তোমার নাম কি? মোর নাম সুশীল বাউদীয়া। কইন্যার বাপ চমকি উঠিল তোমা সচায় কিতা বাউদীয়া! হ্যাঁ বায় হ্যাঁ মুই সচায় বাউদীয়া বিশ্বাস না হয়। তাইলে বাপোই মুই আর তোমাক বেটি দিনু না। তোমরা ওকঠান ছাওয়া। বাউদীয়ার বিয়াও আর হুইল না। এবার বাউদীয়া নিজে বিড়াইল ছাওয়া দেখির, মাঈ তোমার নাম কি ‘ফুলমতী কুতুরি’। তোমার বাপের নাম, ‘মহেশ হালুয়া’। কিরে বাউদীয়া চ্যাংরি পছন্দ হইছে তোর, হ্যাঁ। আরে ওঠা চ্যাংরি না কুতুরি রে কাম কামাই কিছুই করির পায় না, চলিবে ঢক তো আছে। বিয়াও ঠিক ফুলতি কুতুরি আর সুশীল বাউদীয়ার। চারো পাশে হইহই জইজই। বিয়াও হুইল জাগ জমক করি, সগায় খুশি। বিয়ার কয়দিন পর বাউদীয়া ও না করে কামাই আর কুতুরি ও না করে কামাই, বাউদীয়া মনে মনে ভাবে এবার কেমন করি সংসার জমাই। বাউদীয়া আর কুতুরির কৃত্তি দেখি টারির মানষি হাসে খালি গিস্শি।বাউদীয়া আর কুতুরিক গোয়ায় কায় বসি, এংকরি চলিবে আর কতকাল ধরি। হায়রে বাউদীয়া এবার কি হুইবে তোর, মাইয়াক কায় খোয়াইবে তোর!