কোচবিহারের রাজপ্রাসাদের যাত্রা পূজা।

কোচ রাজবংশী কামতাপুরী সমাজের যাত্রা পূজা হৈল্ শুভ কাজত শুভ যাত্রার মতন। এই যাত্রা পূজাত বাড়ির সৌগ জিনিসপত্র যেমন নাঙল, জোঙাল, দাও, কাটাই, ইত্যাদি ব্যবহারিক জিনিসের পূজা দেওয়া হয়। এককথায় কওয়া যায় একজন কিষানের জীবিকার জন্যে যে জিনিসগুলা প্রয়োজনীয় সেই জিনিসগুলাক পূজা দেওয়া হয়। খালি চাষের জন্যে দরকারী জিনিস নোমায়, ছাওয়ালার বই, খাতা তারপর যাতায়াতের জন্যে ডুড্ডুরি গাড়ি বা মটরগাড়ি ইত্যাদি সৌগ জিনিসের পূজা দেওয়া হয় যাত্রা পূজাত।

এই যাত্রা পূজার জন্যে দরকারী বিশেষ দুইটা জিনিস হৈল্ যাত্রাশিশির পাত আর শোলার ফুল। শুভলক্ষণ স্বরুপ খন্জন পখি উড়ানো, এটাও ছিল যাত্রা পূজার দিন একটা বিশেষ নিয়ম যা কোচবিহারের রাজপ্রাসাদতো চালু ছিল। এলা যেহেতু খন্জন পখি দেখায় যায়না ঐজন্যে পখি উড়ানোর নিয়মটা নাই কৈলেই চলে।

খন্জন পখি হৈল্ হিন্দু ধর্ম মতে পবিত্র পখি। সাদা বুকের উপরা কালা দাগ বিশিষ্ট এই পখি শালগ্রাম মূর্তির প্রতীক হিসাবে দ্যাখা হয়। আর এই পখির দর্শন খুবে শুভ মানা হৈত, যেদিয়া এই পখি উড়ি গেইছে ওদি যেদু আগা যায় তালে জয় নিশ্চিত।

পুরানা প্রথা হিসাবে কোচবিহারের রাজপ্রাসাদের সামনত বিজয় দশমীর দিন সাকালবেলা যাত্রা পূজা করা হৈত। ঐদিন কাংও একজন খন্জন পখি নিয়া আসিত রাজপ্রাসাদত। দুয়ার-বক্সী এক হাতত খন্জন পখি নিয়া পাট-হাতির পিঠির উপরা চড়ি পখিটাক খানিকক্ষন একটা পদ্ম পাতের উপরা থুইয়া সেই পদ্মপাতটাক হাতির মাথাত ছুইয়া দিত আর পখিটাক ওড়ে দিত। সাকাল সাকাল এই যাত্রা পূজাত মহারাজা থাকি শুরু করি, সাগাই সোদর সহ যত অফিসার আছে সগায় উপস্থিত থাকিত।