কামতাপুরি কোচ রাজবংশী সমাজের “যাত্রা পূজা”

কামতাপুরি সমাজ বিশেষ করে কোচ রাজবংশী সমাজের বিভিন্ন পূজা পার্বণের মধ্যে  যাত্রা পূজা (Yatra Puja) হল অন্যতম। যাত্রা পূজার মধ্যে মৌলিকতার ছোঁয়া বিদ্যমান যা ভারতের অন্যান্য প্রদেশ এমনকি বাংলার দক্ষিণ ভাগেও এই পূজা লক্ষ্য করা যায়না।  দেবীপূজার শেষ দিন নবমী পূজার পর যাত্রা পূজা করা হয় ।

বাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যেমন লাঙ্গল, জোয়াল, ছাম, গাইন,  কাটারি, দা, কুড়ুল সবকিছু ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে ঠাকুর ঘরের সামনে আঙ্গিনায় রেখে পূজা দেওয়া হয়। যান বাহন যেমন মোটর সাইকেল বা মোটর গাড়ি ও বই খাতা কেও পূজা দেওয়া হয়। গরু, মোষ কে খড়ি মাটি ও  সিঁদুরের ফোটা দেওয়া হয়। এই পুজার এক বিশেষত্ব হল শোলার বা ভোপলার ফুল ও যাত্রা সিজের পাতা। বাড়ির প্রতিটা ঘরের বারান্দায় এই ফুল বেঁধে দেওয়া হয়।

কামতাপুরি কোচ রাজবংশী সমাজে গণেশ ঠাকুর, সরস্বতী ঠাকুর, বিশ্বকর্মা ঠাকুর আলাদা করে পুজার নিয়ম নেই। যাত্রা পূজার পদ্ধতি ও উপকরণ দেখলে সহজে বোঝা যায় কামতাপুরি সমাজের বেশির ভাগ কৃষি প্রধান মানুষই বহু শতাব্দী আগের থেকে দেবী পূজার এই দিনটিতে কৃষি কাজের সাথে যুক্ত সব জিনিস এবং শিক্ষায় যাতে উন্নতি লাভ হয় তার জন্য তার সমস্ত উপকরণ এর উপাসনা করে আসছে।

এই পূজায় কোনও দেব দেবীর মূর্তি নেই , কৃষি কাজ বা পড়াশুনার সাথে জড়িত জিনিসপত্র বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রকেই দেবতা হিসেবে পূজা করা হয়। ব্রাহ্মণ ছাড়াই যাত্রা পূজা সম্পাদিত হয়। ব্রাহ্মণবাদ বহির্ভূত কামতাপুরি সমাজের এই অতি প্রাচীন ঐতিয্য স্বমহিমায় উজ্জ্বল।

Courtesy: Shrabasti R.